Wednesday, February 15, 2012

বাংলাদেশের বাজারে ভারতীয় পণ্য ও প্রতিষ্ঠানের তালিকা

[এই পোস্টের উদ্দেশ্য সাধারণ মানুষকে বাংলাদেশে যেসব ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের পণ্য কিংবা ভারতীয় প্রতিষ্ঠান ব্যবহৃত হয় সে সম্পর্কে ধারণা দেওয়া, এসব পণ্য বা প্রতিষ্ঠান এড়িয়ে চলে কিংবা ব্যবহার না করে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ভারতীয় বানিজ্যিক আগ্রাসন থেকে মুক্ত করার এবং স্বদেশী পণ্য ব্যবহার করে দেশীয় অর্থনীতিকে সমৃদ্ধশালী করার পেছনে ভূমিকা রাখা যায়| কোনো ধরনের ধর্মীয় কিংবা ভারত বিদ্বেষ ছড়ানো এই পোস্টের উদ্দেশ্য নয়, তাই সুযোগসন্ধানীরা (ছাগু) দুরে থাকুন|]


বাংলাদেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় বেশ কিছু ভারতীয় পন্যের কিংবা প্রতিষ্ঠানের অত্যাধিক ব্যবহার দেশের অর্থনীতিকে পেছনে ঠেলে দিচ্ছে, শুধু তাই নয়, একই মানসম্মত বাংলাদেশী পণ্য এবং প্রতিষ্ঠানগুলো বাজারে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছে। তাই বাংলাদেশী পন্যের চাহিদা খোদ বাংলাদেশেই কমে যাচ্ছে, কিন্তু এই ধরনের পণ্য পৃথিবীর অনেক দেশে রপ্তানী হচ্ছে দেদারসে| এর মাঝে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের সুবিশাল অর্থনীতির চাপে পড়ে দেশীয় বাজার হুমকির সম্মুখীন, তাই স্বদেশী পণ্য ব্যবহার করে আমাদের দেশ, বাংলাদেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার প্রয়োজন| যেহেতু বাংলাদেশের বাজারে ভারতীয় পন্যের চাপ বেশি তাই কিছু শীর্ষস্থানীয় পণ্য এবং প্রতিষ্ঠানের নাম দেওয়া হলো, তবে শুধু ভারত নয়, দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে দেশের সবাইকে স্বদেশী পণ্য ব্যবহার ও বিদেশী পণ্য এড়িয়ে চলার প্রতি মনোযোগ দিতে হবে| যেসব পণ্য ও প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে দেশীয় পণ্য ও প্রতিষ্ঠান সহজলভ্য সেসব ক্ষেত্রে অতি অবশ্যই দেশীয় পণ্য ও প্রতিষ্ঠানের ব্যবহার এবং অপরকেও উত্সাহ দেওয়া প্রয়োজন|

[b][u]বাংলাদেশের বাজারে শক্তিশালী কিছু ভারতীয় পণ্য ও প্রতিষ্ঠানের তালিকা[/u][/b] -

[u]প্রতিষ্ঠান[/u] -

১. কিংফিশার
২. আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক
৩. এযারটেল
৪. স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া
৫. এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক
৬. এয়ার ইন্ডিয়া
৭. জেট এয়ারওয়েজ


[u]প্রসাধনী[/u] -

১. লেকমে
২. হিমালয়া
৩. বোরোলীন

[u]অটোমোবাইল[/u] -

১. বাজাজ
২. টাটা
৩. মাহিন্দ্রা
৪. হিরো
৫. মারুতী

[u]জীবন-যাপন[/u] -

১. টাইটান
২. এপোলো গ্রুপ
৩. তাজ গ্রুপ
৪. গোদরেজ সামগ্রী
৫. সিনথল
৬. ভিআইপি
৭. প্যারাসুট (মারিকো গ্রুপ)


[u]খাবার[/u] -

১. কিসান
২. বারিস্তা
৩. কোয়ালিটি
৪. মাদার ডেইরি
৪. ব্রিটানিয়া
৫. ডাবর
৬. আমুল


[উপরোক্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের একাধিক পণ্য জীবন-যাপনের নানা ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়ে থাকে, তাই একাধিক পণ্য উত্পাদনকারী কিছু প্রতিষ্ঠানের নাম সরাসরি দেওয়া হলো, আলাদা আলাদা ভাবে পণ্যগুলোর নাম উল্লেখ না করে|]

এছাড়াও বিভিন্ন ক্ষুদ্র কিংবা ব্যক্তিগত পণ্য ও প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের বাজারে ভারতীয় পণ্য বিক্রি করছে, বিশেষ করে পোশাক এবং কুটির-শিল্পসামগ্রী ইত্যাদি| এসব পণ্য ও প্রতিষ্ঠানের নাম জানা থাকলে যোগ করতে পারেন এই তালিকার সাথে| এছাড়াও নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীর জন্য ভারতীয় পণ্য ব্যবহার হ্রাস করতে হবে ( পিঁয়াজ, মাংস ইত্যাদি)।


[u]এসব পণ্য ও প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে বাংলাদেশের কিছু আন্তর্জাতিক মানের সামগ্রী উত্পাদনকারী সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান[/u] -

১. প্রাণ
২. কেয়া
৩. জিএমজি এয়ারলাইনস
৪. ইউনাইটেড এয়ারলাইনস
৫. রিজেন্ট এয়ারলাইনস
৬. বেক্সিমকো
৭. নাভানা
৮. স্কয়ার
৯. গ্রামীন
১০. রহিম-আফরোজ
১১. আড়ং
১২. একমে
১৩. ইনসেপটা
১৪. প্রাইড
১৫. ওয়ালটন

প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।

বর্তমানে পোশাক, খাবার, ওষুধ, কুটিরশিল্প ইত্যাদি সামগ্রী আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানিতে শীর্ষস্থানীয় দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম|বিশেষ করে পোশাক ও ওষুধ রপ্তানিতে অনেকদিন ধরেই বাংলাদেশ আন্তর্জাতিকভাবে বেশ ভালো অবস্থানে আছে| তাই দেশীয় এসব পণ্য নিঃসন্দেহে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন এবং এর সাথে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্যান্য দ্রব্যাদিও মানসম্পন্ন এই আশা করা যায়| তাই ভারতীয় কিংবা অন্যান্য দেশের তৈরী সামগ্রীর পরিবর্তে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর তৈরী সামগ্রী ক্রয় করলে দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী হবে নিঃসন্দেহে।

দেশকে সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী করার দায়িত্ব সকল নাগরিকের, এর জন্য প্রয়োজন সচেতনতা| তাই বাজারে সামগ্রী ক্রয়ের সময় দয়া করে সামগ্রীর গায়ে উল্লেখিত লেখাগুলো পড়ে দেখে নিন সেটি কোন দেশের তৈরী, যদি সেই সামগ্রী বাইরের দেশের প্রতিষ্ঠানের তৈরী হয় এবং আপনার কাছে দেশীয় প্রতিষ্ঠানের তৈরী একই সামগ্রী কেনার সুযোগ থাকে তাহলে স্বদেশী সামগ্রী কিনে দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখুন|

পরিবর্তন একদিনে আসেনা, পরিবর্তনের জন্য বিশাল আয়োজনেরও প্রয়োজন পড়ে না, নিজ নিজ জায়গায় থেকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পদক্ষেপগুলিই পারবে এক বড় পরিবর্তনের সূচনা করতে|

2 comments: