বিশেষ করে রাস্তার মাঝখানে যাত্রী নামানো এবং উঠানো হতে শুরু করে, বেপরোয়াভাবে সংকীর্ণ রাস্তায় ক্ষিপ্র গতিতে গাড়ি চালানো, রাস্তায় চলাচলরত পথচারীদের প্রায় শরীরের উপরে চাকা উঠিয়ে দেয়া ইত্যাদি নানাধরনের কার্যক্রম থেকে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, এইসব যাত্রীবাহী গাড়িগুলোর কোনো চালকই অন্তত আইনগতভাবে লাইসেন্সপ্রাপ্ত নয়। এমনকি হয়তো এদের কেউই শিক্ষিত লাইসেন্সধারী চালক নয়। এছাড়াও ব্যস্ত রুটগুলোতে প্রতিদিন অসংখ্য বাস এবং মিনিবাস চলাচল করে যাদের অধিকাংশ চালকই ট্রাফিক আইন সম্পর্কে বিন্দুমাত্র ধারণা রাখেনা। আর ট্রাক চালকদের কথা নতুন করে কিছু বলার নেই। সাধারণ সড়ক কিংবা হাইওয়ে সব জায়গাতেই অসংখ্য দুর্ঘটনার কারণ এই ট্রাক চালকরা অধিকাংশ সময়ই প্রচন্ড বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালিয়ে নানা ধরনের আইন অমান্য করে অসংখ্য মানুষের জীবনহানির কারণ। হাইওয়ের অধিকাংশ চালককেই রাতের বেলা মাতাল অবস্থায় গাড়ি চালাতে দেখা যায়। এসব ব্যাপারে সরকারিভাবে নেই কোনো বিশদ মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা। তাই দুর্ঘটনার সংখ্যা বেড়েই চলেছে প্রতিনিয়ত।
সরকারী হিসেব মতে দেশে প্রায় ১.৫ মিলিয়ন যন্ত্রচালিত গাড়ি চলাচল করে এর সাথে আছে আনুমানিক ৩ মিলিয়নের মত সাধারণ রিকশা,ভ্যান,সাইকেল ইত্যাদি। যন্ত্রচালিত গাড়ির মাঝে প্রায় শতকরা ৬০ ভাগ হচ্ছে দুই বা তিন চাকার। দেশে বিভিন্ন সড়কের উন্নয়নের সাথে সাথে যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে যানবাহনের সংখ্যা একই সাথে বেড়ে চলেছে দুর্ঘটনার সংখ্যাও। দেশে প্রতি বছর প্রায় ৫০০০ কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে সড়ক দুর্ঘটনার ফলে। বাংলাদেশে প্রতি ১০ হাজার রেজিস্টার্ড যানবাহনের বিপরীতে সড়ক দুর্ঘনায় মৃতের সংখ্যা ৮৫ জন। যা পার্শ্ববর্তী যেকোনো দেশের তুলনায় অনেক বেশি। এদের মাঝে শতকরা ৫০ ভাগ হচ্ছেন পথচারী। দেশের সড়ক দুর্ঘটনাগুলোর প্রায় শতকরা ৭৭ ভাগ মারাত্মক প্রকৃতির। যাতে আক্রান্তদের মৃত্যু ঝুঁকিই বেশি।
দেশের প্রায় শতকরা ৭০ ভাগ মারাত্মক সড়ক দুর্ঘটনাগুলো ঘটে গ্রামাঞ্চলে। এছাড়াও প্রায় শতকরা ৫০ ভাগ দুর্ঘটনাই ঘটছে হাইওয়েগুলোতে। বিশেষ করে রাস্তা পারাপার হওয়ার সময় দুর্ঘটনায় প্রতি বছর অসংখ্য মানুষের মৃত্যু ঘটছে। দুর্ঘটনাগুলোর পরিসংখ্যান যাচাই করলে প্রাপ্ত তথ্য থেকে দেখা যায় যে, শতকরা ৩৮ ভাগ ঘটনা ন্যাশনাল হাইওয়েগুলোতে, শতকরা ১২ ভাগ আঞ্চলিক রাস্তাগুলোতে, শতকরা ১৫ ভাগ সাধারণ রাস্তাগুলোতে এবং শতকরা ৩৫ ভাগ আরও বিভিন্ন রাস্তায় যার মাঝে শহরের রাস্তাগুলোও রয়েছে।
বিভিন্ন মাধ্যম হতে পাওয়া তথ্যগুলো একসাথে করার চেষ্টা করি। ২০১০ সাল পর্যন্ত রেজিস্টার্ড যানবাহনের সংখ্যার হিসেব-
প্রতিবছর যেভাবে যানবাহনের সংখ্যা বাড়ছে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত-নিহত মানুষের সংখ্যাও। ১৯৯৫-২০১০ সাল পর্যন্ত ১৬ বছরের সরকারী পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রাপ্ত তথ্যগুলো-
একটু খেয়াল করলেই দেখা যায় যে, প্রতি বছর সড়ক দুর্ঘটনায় আক্রান্ত আহত-নিহত ব্যক্তির মোট সংখ্যাটি কখনোই ৪,০০০ এর নিচে নামেনি। এই সংখ্যাগুলোকে যদি একটি চার্টের মাধ্যমে প্রকাশ করি তাহলে দেখা যাবে, যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যাটি সম্পর্কযুক্ত।
[১৯৯৫-২০০২ সাল]
[২০০৩-২০১০ সাল]-
দেখা যাচ্ছে যে, প্রতি বছরই আশংকাজনক মাত্রায় ঘটে চলেছে সড়ক দুর্ঘটনা। কিন্তু তারপরেও সরকারী উদ্যোগে যানবাহন ও তার চালক নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো কঠোর ব্যবস্থা বেয়া হচ্ছেনা। এছাড়াও অশিক্ষিত এবং প্রশিক্ষণবিহীন এসব চালকদের মাধ্যমে যানবাহন নিয়ন্ত্রনের ফলে রাস্তায় বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চলাচল বৃদ্ধি পেয়েছে অনেকগুন। অনেকসময় দেখা যাচ্ছে গাড়ির হেলপার কোনো প্রশিক্ষণ ছাড়াই গাড়ি চালিয়ে নিচ্ছে। এতে করে যেভাবে যাত্রীদের মৃত্যুঝুঁকি বেড়েছে একইসাথে বেড়েছে পথচারীদের ঝুঁকি।
২০১১ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যকে যদি বিশ্লেষণ করা যায়, তাহলে দেখা যাচ্ছে, দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের প্রায় শতকরা ৬০ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। এই চারমাসে সংঘটিত ৮৬৩টি দুর্ঘটনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৩৮৬ জন মানুষ।
এসবই সরকারীভাবে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রস্তুত করা কিছু চার্ট। তবে পুলিশের খাতায় রেজিস্টার করা দুর্ঘটনা ছাড়াও প্রতিবছর অসংখ্য দুর্ঘটনা ঘটছে। যাতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সংখ্যাও অনেক। তাহলে বাস্তব প্রেক্ষাপটে এই হিসেবগুলোর বাইরে সত্যিকার অর্থে দুর্ঘটনা এবং আহত-নিহত ব্যক্তির সংখ্যাও আরও অনেকটাই বেশি।
দক্ষিন-এশিয়ার দেশগুলোর মাঝে বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃতের হার সব থেকে বেশি। প্রাপ্ত তথ্যগুলোকে যদি একটি গ্রাফের মাধ্যমে প্রকাশ করি তাহলে দেখা যায়-
দেখা যাচ্ছে, ১ লক্ষ গাড়ির বিপরীতে সড়ক দুর্ঘটনায় আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৬,৩০০। এর পরে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে একমাত্র পাকিস্তান যাদের সংখ্যা ২,৩০০। নেপাল ছাড়া বাকি দেশগুলোর কারোই এই সংখ্যাটি হাজারের উপরে নয়। এই আশংকাজনক মাত্রায় দুর্ঘটনা ঘটে চলার পরেও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে ফিটনেসবিহীন যানবাহন ও প্রশিক্ষণবিহীন চালকের সংখ্যা। একইসাথে সাধারণ জনগণও উপেক্ষা করে চলেছে ট্রাফিক আইন।
দেশের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় ছাপা হওয়া কিছু পুরনো যানবাহনের ছবি দেখলে বিশ্বাস করা কষ্টকর হয়ে উঠে এইধরনের গাড়ি রাস্তায় চলে কি করে। কিন্তু বাস্তবে রাস্তায় বের হলেই এদের দেখা মেলে হাজারে হাজারে।
বিশেষ করে সিএনজি গ্যাস চালিত অটোরিক্সাগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ। কিন্তু তারপরেও এদের লাইসেন্স বাতিল করা হচ্ছেনা।
পরিবারে সদস্যরা রাস্তায় বের হলেই এখন প্রধান চিন্তার বিষয় তারা ঠিক ভাবে ঘরে ফিরবে কিনা? প্রতিনিয়ত ঘটে চলা অসংখ্য সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষের প্রাণহানি এখন চরম মাত্রা অতিক্রম করেছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট মহলের এই নিয়ে কোনো মাথা ব্যথা নেই। এমনকি সাধারণ জনগণ এর মাঝেও এই বিষয়ে সচেতনতা খুবই কম।
দেশের রাস্তাগুলোতে রোড-সাইন একটি দুর্লভ বিষয়। অধিকাংশ হাইওয়ের অবস্থাও তাই। পর্যাপ্ত সাইন এর অভাব এবং একই সাথে অশিক্ষিত প্রশিক্ষণবিহীন চালকদের রোড সাইন সম্পর্কে অজ্ঞতা দুর্ঘটনার আরও একটি কারণ।
এই রোড-সাইনগুলোর অধিকাংশই দেশের কোনো রাস্তায় খুঁজে পাওয়া যাবেনা। এমনকি চালক কিংবা সাধারণ পথচারী অনেকেই এই সাইনগুলোর সাথে পরিচিত নন।
দেশে বেপরোয়া গতির যানবাহনের গতিরোধ করার জন্য যে অদ্ভুত আকৃতির কিছু গতিরোধক নির্মান করা হয়েছে তাও অনেকক্ষেত্রেই দুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাড়াচ্ছে। এই ধরনের অসংখ্য গতিরোধক দেশের রাস্তাগুলোর যত্রতত্র নির্মান করা হয়েছে এবং অধিকাংশের আগে কোনো ধরনের সতর্কতা নির্দেশনা নেই। তাই বিশেষ করে রাতের বেলা চলাচলকারী যানবাহনের জন্য এটি অন্যতম দুঃশ্চিন্তার কারণ। ট্রাফিক সিগন্যাল এর সাথে সাথে দেশে নিয়োজিত আছে ট্রাফিক পুলিশ কিন্তু অধিকাংশ যানবাহনের চালকই এই সিগন্যাল অমান্য করে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছেন। এরকম অসংখ্য দুর্ঘটনা খোদ ঢাকা শহরেই ঘটেছে। বিশেষ করে মোটরসাইকেল চালকদের সিগন্যাল অমান্য করে গাড়ি চালাতে হরহামেশাই দেখা যাচ্ছে। এছাড়াও অনেক বাস চালকই বেপরোয়া গতিতে ট্রাফিক সিগন্যাল অমান্য করে নিয়মিত গাড়ি চালাচ্ছেন। দেখা যাচ্ছে, এই ধরনের চালকদের থামানোর জন্য ট্রাফিক পুলিশদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তার মাঝখানে দাড়িয়ে গিয়ে দুই হাত ছড়িয়ে সংকেত দিয়ে গাড়ি থামাতে হচ্ছে। এই যদি হয় একটি সভ্য দেশের রাস্তার চিত্র তাহলে কি করে দুর্ঘটনা হ্রাস পাবে?
বাংলাদেশের বিভিন্ন সড়কের অবস্থাও সঙ্গিন। বিশেষ করে বর্ষাকালে রাস্তায় চলাচল করা একধরনের অভিযানের মতো। তার উপরে সারা বছর ধরে রাস্তা আংশিক বা সম্পূর্ণ বন্ধ করে চলে নানা ধরনের সরকারী-বেসরকারী নির্মান কাজ। একেই দেশের রাস্তাগুলো যানবাহনের মোট সংখ্যার তুলনায় নগন্য তার উপরে এভাবে রাস্তা বন্ধ করার ফলে বৃদ্ধি পাচ্ছে ভোগান্তি ও নানা ধরনের ছোটখাটো দুর্ঘটনার সংখ্যা। এছাড়াও দেশের অধিকাংশ রাস্তায় পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা নেই। তাই অন্ধকারেই দৌড়ে রাস্তা পারাপার হচ্ছে মানুষ। বিশেষ করে শহরের আবাসিক এলাকার ভেতরের অনেক রাস্তাই সম্পূর্ণ অন্ধকার থাকে। রাস্তাগুলো নির্মাণগত দিক থেকেও ত্রুটিপূর্ণ অনেকাংশেই। কিন্তু তারপরেও সরকারীভাবে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছেনা। অধিকাংশ রাস্তাতে পথচারীদের চলাচলের জন্য আলাদা কোনো ব্যবস্থাই নেই! রোড ডিভাইডার হতে শুরু করে প্রয়োজনীয় জেব্রা ক্রসিং পর্যন্ত নেই আমাদের দেশের রাস্তাগুলোতে। এমনকি যেসব রাস্তায় জেব্রাক্রসিং আছে সেখানেও মানুষ এর কোনো ব্যবহার জানেনা কিংবা জানলেও ব্যবহার করছেনা। অধিকাংশ চালক জেব্রাক্রসিং দিয়ে চলাচলকারী পথচারীদের দেখে গাড়ি ধীরগতির না করে বরং তীব্র গতিতে বেরিয়ে যাচ্ছে।
দেশের শহরগুলোতে পথচারীদের রাস্তা পারাপারের জন্য যেসব ফুটওভারব্রিজ রয়েছে তাতে বিভিন্ন হকার নিয়ে বসছে তাদের পসরা। এতে করে জায়গা সংকীর্ণ হচ্ছে একই সাথে পথচারীদের ফুটওভারব্রিজ ব্যবহারেও নানা অনীহা কাজ করছে। অধিকাংশ মানুষ রাস্তা দৌড়ে পারাপার হওয়াটাকেই শ্রেয় মনে করেন। এছাড়াও যেসব সাবওয়ে বানানো হয়েছিল সেগুলো অধিকাংশই এখন ব্যবহার অনুপযোগী। এগুলোতে আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থী অসংখ্য ঘটনা ঘটার ফলে মানুষ এগুলোও ব্যবহার বন্ধ করে দিয়েছে। তাই রাস্তায় জীবনের ঝুঁকি নিয়েই নিয়মিত চলাচল করছে মানুষ। প্রধান সড়কগুলোতে এরকম অজস্র যানবাহনের মাঝখান দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে নিয়মিত পারাপার হয় সাধারণ মানুষ।
অনেকসময়ই রেলক্রসিংগুলোতে ট্রেনের ধাক্কায় মারা যাচ্ছে মানুষ। দেশের অধিকাংশ রেলক্রসিংয়ে নেই পর্যাপ্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা, নেই কোনো সঠিক আগাম সংকেতের ব্যবস্থাও। অনেকক্ষেত্রে রেল লাইন সংলগ্ন বস্তিগুলোর অসচেতন বাসিন্দারা দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। রেলক্রসিংগুলোতে উন্নত সুরক্ষাব্যবস্থার প্রয়োগে এই দুর্ঘটনা অনেকাংশেই কমিয়ে আনা সম্ভব।
এছাড়াও দুর্ঘটনাকবলিত স্থানে দ্রুত চিকিৎসা সাহায্য পৌঁছানো, এম্বুলেন্স, ইমার্জেন্সি সার্ভিস এবং ফার্স্ট-এইড টিম সংক্রান্ত ব্যাপারগুলো দেশে সম্পূর্ণ অনুপস্থিত। হাইওয়েগুলোতে পুলিশের পেট্রোল কারের সংখ্যাও নগন্য। নেই কোনো মেডিকেল হেলিকপ্টার এর ব্যবস্থা। তাই দুর্ঘটনায় আক্রান্ত মানুষদের হাসপাতালে স্থানান্তরে জন্য অনেক মূল্যবান সময় নষ্ট হচ্ছে এবং তাতে মৃত্যু সম্ভাবনাও বেড়ে যাচ্ছে। এই বিষয়গুলোতে সরকারের আশু পদক্ষেপ প্রয়োজন।
গাড়ির সিটবেল্ট এবং হেলমেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে অনীহা, ঝুঁকিপূর্ণ গতিতে গাড়ি ওভারটেক করা, ওভারলোডিং, ফিটনেসবিহীন গাড়ি চালানো, ট্রাফিক আইন সম্পর্কে অজ্ঞতা ইত্যাদি নানা কারণে বেড়েই চলেছে সড়ক দুর্ঘটনা। ঘনবসতিপূর্ণ এই দেশটিতে রাস্তার তুলনায় যেরকম বৃদ্ধি পেয়েছে যানবাহনের সংখ্যা একই সাথে বাড়ছে সড়কে মানুষের জীবনের ঝুঁকি। কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে বিভিন্ন গাড়ি ভাংচুর করে আগুন জ্বালিয়ে সাধারণ জনতা ক্ষোভ প্রকাশ করলেও তারা ভুলে যাচ্ছে এটা কোনো পন্থা নয়। বরং নিজের দেশের সম্পত্তিই বিনষ্ট করা হচ্ছে কিন্তু সঠিক পদক্ষেপ কিংবা সচেতনতা কিছুই হচ্ছেনা। এভাবে চলতে থাকলে দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা দিনে দিনে বাড়তে থাকবে।
সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সরকার এবং জনগণ উভয় ক্ষেত্রেই সহযোগিতা ও সচেতনতা প্রয়োজন। প্রয়োজন ট্রাফিক আইন সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান। দেশে উন্নত ট্রাফিক মনিটরিং ব্যবস্থা, উন্নত সড়ক তৈরী, কঠোরভাবে ফিটনেসবিহীন যানবাহন প্রতিরোধ এবং প্রশিক্ষণবিহীন চালকদের অপসারণ সহ অজস্র জরুরি উদ্যোগ প্রয়োজন। সবার আগে প্রয়োজন সড়কে যানবাহন চলাচল এবং দুর্ঘটনা সংক্রান্ত ব্যাপারগুলোতে আইনের সঠিক প্রয়োগ। নাহলে একদিন এভাবেই আবার হারিয়ে যাবে কোনো প্রিয়জন মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়ে।
[তথ্য:
বাংলাদেশ যোগাযোগ মন্ত্রনালয়
পুলিশ হেডকোয়ার্টার (এফআইআর রিপোর্ট)
বিভিন্ন সংবাদপত্র
বিআরটিএ
সড়ক দুর্ঘটনাসংক্রান্ত উইকিপিডিয়া রিপোর্ট
ইন্টারনেট]
No comments:
Post a Comment