Friday, October 5, 2012

সাম্প্রদায়িক নির্যাতন, মানবিকতার "রোহিঙ্গা" ইস্যু এবং কিছু প্রাসঙ্গিক বিষয়



বাংলাদেশে গত কিছুদিন ধরে যেই বিষয়টি নিয়ে সব থেকে বেশি আলোচনা হয়েছে সেটি সাম্প্রতিক সময়ে রামু,পটিয়া,উখিয়া এই অঞ্চলগুলোতে ঘটে যাওয়া সাম্প্রদায়িক নির্যাতন, এটি নির্দ্বিধায় বলা যায়। এই সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ যখন সোচ্চার হয়েছে, তখন অন্য সকল ঘটনার মতো এই ঘটনাতেও মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে সুযোগসন্ধানী একটি গোষ্ঠী। যেখানে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে শুভশক্তি ও মানবিকতার উত্থানের প্রশ্নে আজকে দেশের একটি বড় অংশ একতাবদ্ধ, সেখানেও একটি বিশেষ গোষ্ঠী নানাধরনের অযৌক্তিক ব্যাখ্যা এবং প্রোপাগান্ডার মাধ্যমে এই কর্মকান্ডকে প্রশ্নবিদ্ধ করে চলেছে। তাদের মূল বক্তব্যগুলোর মাঝে একটি প্রসঙ্গ প্রায়ই ঘুরে ফিরে আসছে, আর তা হলো, মায়ানমারের আরাকান প্রদেশে কয়েক মাস আগে ঘটে যাওয়া রাখাইন-রোহিঙ্গা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের জন্য আমাদের মানবিকতা কোথায় ছিলো? এই প্রশ্নটি দিয়ে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া সাম্প্রদায়িক নির্যাতনের মূল প্রসঙ্গ থেকে দৃষ্টি সড়িয়ে নিয়ে সাধারণ মানুষকে দ্বিধাবিভক্ত করার একটি অপ-প্রয়াস দেখা যাচ্ছে। বিভিন্ন মাধ্যমে বেশ কিছু আলোচনা লক্ষ্য করে এই বিষয়টি পরিষ্কার যে, একটি মহল, মায়ানমারে ঘটে যাওয়া সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার বিষয়টি দিয়ে বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চলগুলোতে ঘটে যাওয়া এই সাম্প্রদায়িক নির্যাতনকে সিদ্ধ করার চেষ্টা চালাচ্ছে। তাই ব্যক্তি অবস্থান থেকে এই অপ-প্রয়াসের বিরুদ্ধে নিজের অবস্থান ব্যক্ত করা জরুরি মনে করছি।


সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা এবং সাম্প্রদায়িক নির্যাতনের পার্থক্য :

আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা এবং নির্যাতন এই বিষয়টিকে জ্ঞাত কিংবা অজ্ঞাতভাবে এক করে দেখার চেষ্টা করেন। প্রথমেই এই দুটি বিষয়ের মধ্যবর্তী পার্থক্য নির্ধারণ করা প্রয়োজন। উপমহাদেশের ইতিহাসে সাম্প্রদায়িকতা একটি প্রাচীন ব্যাধি। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অঞ্চল সম্প্রদায়ভেদে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার অনলে দগ্ধ হয়েছে। কিন্তু স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশের ইতিহাসে সাম্প্রদায়িকতা কি শুধুই নির্যাতন নাকি দাঙ্গা এই বিষয়েও বিশ্লেষণ প্রয়োজন।

সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় একটি কিংবা একাধিক সম্প্রদায় জড়িত থাকে। কোন উস্কানিমূলক ঘটনাকে কেন্দ্র করে জন্ম নেয়া দাঙ্গার ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়াতে অংশগ্রহণকারী যেকোন সম্প্রদায়ভুক্ত ক্ষতিগ্রস্থ হন। লক্ষনীয় বিষয় এই যে, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় কম-বেশি উভয়পক্ষই ক্ষতিগ্রস্থ হয়। প্রাণহানি, সম্পদের ধ্বংস হতে শুরু করে প্রত্যেকটি বিষয়ে উভয়েই আক্রান্ত হয়ে থাকে। আর এই দাঙ্গার মূলে থাকে সাম্প্রদায়িক প্রতিহিংসা। তাই এক্ষেত্রে দলবদ্ধভাবে দাঙ্গাকারীদের আক্রমনে ঘটনাস্থলে দুর্বল প্রতিপক্ষ যেকোন সময় যেকোন ভাবে আক্রান্ত হয়। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার বিষয়টি এবং এর ব্যাপকতা, অংশগ্রহণকারী উভয়পক্ষের উপর নির্ভরশীল।

সাম্প্রদায়িক নির্যাতন এর থেকে ভিন্ন। সাম্প্রদায়িক নির্যাতনে অপেক্ষাকৃত শক্তিশালী এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ একটি সম্প্রদায়ের কাছে একটি কিংবা একাধিক সম্প্রদায়ের মানুষ আক্রান্ত এবং ক্ষতিগ্রস্থ হন। উস্কানিমূলক কোন ঘটনার থেকে এর উৎপত্তি হলেও এর প্রতিক্রিয়া ভোগ করতে হয় শুধুই দুর্বল প্রতিপক্ষকে। তাই প্রাণহানি এবং সম্পদের ধ্বংসসাধনের মতো ব্যাপারগুলো নির্যাতিত সম্প্রদায়ের উপরেই চলে। তাই সাম্প্রদায়িক নির্যাতনের বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে আক্রমনকারী/দাঙ্গাকারী শক্তিশালী সম্প্রদায়টির উপরে নির্ভরশীল এবং অনেকাংশেই পূর্বপরিকল্পিত।

মায়ানমারের সাম্প্রদায়িক সহিংসতা দাঙ্গা নাকি শুধুই নির্যাতন এটি ঘটনা পরবর্তী তথ্যসমূহ যাচাই করলে কিছুটা বোঝা সম্ভব।

প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে দাঙ্গার শুরু হয় একটি ধর্ষণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে। রোহিঙ্গা অধিবাসীদের একটি দল রাখাইন একজন সন্ন্যাসিনীকে গণধর্ষণ এর পর হত্যা করলে রাখাইন সম্প্রদায়ের মাঝে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। আর এর পেছনে অনুঘটকের কাজ করে বহুদিন ধরে চলে আসা রোহিঙ্গা-রাখাইন সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা। এই ঘটনাটি কোন একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের মানুষের মাঝে সংঘটিত হলে এই দাঙ্গা হয়তো সূচনাই হতোনা। কিন্তু সংঘর্ষপ্রবণ দুটি সম্প্রদায়ের মধ্যে এই ঘটনাটি বিস্ফোরক হিসেবে কাজ করে এবং উভয়পক্ষের মাঝে দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু এই দাঙ্গায় একইসাথে উভয়পক্ষই আক্রান্ত হয়। মায়ানমার সরকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এই দাঙ্গায় ৮৮ জনের মৃত্যু হয়, এর মাঝে ৫৭ জন মুসলিম এবং ৩১ জন বৌদ্ধ। ৯০,০০০ হাজার মানুষ স্থান ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। ২,৫২৮টি বসতি আগুনে ভস্মীভূত হয়। এর মাঝে ১,৩৩৬টি বসতি রোহিঙ্গাদের এবং ১,১৯২টি রাখাইনদের।

প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করলে এটা সহজেই অনুমেয়, কোন একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায় এই দাঙ্গায় এককভাবে ক্ষতিগ্রস্থ নয়। বরং এই সহিংসতায় উভয়পক্ষেরই মারাত্মক ক্ষতিসাধন হয়েছে। বৈষয়িক এবং মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে এই দাঙ্গার শিকার উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ। তাই কোন একপক্ষের জন্য সহমর্মিতা প্রকাশ করা মানে অন্য আরেকটি পক্ষের প্রতি অমানবিক আচরণ।

তাই আরাকান প্রদেশে ঘটে যাওয়া সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনাটি একটি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। লক্ষনীয়, এই ঘটনার সাথে বাংলাদেশের কোন নাগরিক, সে যে সম্প্রদায়ের হোক না কেন, কোন ভাবেই সম্পৃক্ত নয়।

রামু,পটিয়া,উখিয়াতে ঘটে যাওয়া সহিংস ঘটনাগুলো যে সাম্প্রদায়িক নির্যাতন, এটাও প্রাপ্ত তথ্য যাচাই করে বোঝা সম্ভব।

সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে একজন বৌদ্ধ যুবককে ধর্মীয় অবমাননাকর ছবিতে যুক্ত করা হয় একটি গ্রুপ থেকে। যার জন্য ঐ যুবক নিজে কোনভাবেই দায়ী নন। কিন্তু এতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে ইসলাম ধর্মালম্বী সম্প্রদায়ের মাঝে। আপাতভাবে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে থাকা এই দুই সম্প্রদায়ের মাঝে একটি সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার সূচনা হয়।

এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য যাচাই করলে দেখা যায়, রামুতে আক্রান্ত সম্প্রদায় হচ্ছে বৌদ্ধ ধর্মালম্বীরা। প্রায় ১০টি গ্রামে, তাদের ১০টি প্যাগোডা এবং ৪০টি বাড়ি আগুনে ভস্মীভূত হয়েছে। ভাংচুর হয়েছে শতাধিক বসতি। বর্তমানে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে অসংখ্য মানুষ। কিন্তু এই অঞ্চলে বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের সাথে একইসাথে বসবাস করা আর অন্য কোন সম্প্রদায়ের উপর হামলা হয়নি। এমনকি এই হামলায় কারো প্রাণহানির খবর এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। আগুন জ্বালানোর আগে প্রত্যেকটি বাড়ি থেকে সম্পদ লুট করা হয়, প্যাগোডা থেকে ছিনিয়ে নেয়া হয় সোনার গৌতম বুদ্ধের মূর্তি ও দামি অন্যান্য সামগ্রী। সুচারুভাবে সম্পন্ন করা এই হামলা পর্যবেক্ষণ করে প্রায় সকল মাধ্যম একে পূর্বপরিকল্পিত বলে ঘোষণা করেছে।

রামুর ঘটনাটি যেই রাতে সংঘটিত হয় তার পরের দিন মধ্যাহ্নে হামলা হয় পটিয়াতে। এই হামলায় বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের সাথে আক্রান্ত হয় সনাতন ধর্মালম্বীরাও। বেশ কয়েকটি প্যাগোডা এবং মন্দির ধ্বংস করা হয়, আগুন জ্বালিয়ে দেয়া হয় বসতিতেও। পটিয়াতে এই হামলার জন্য আগের থেকে কোন উত্তেজনা কিংবা অপ্রীতিকর ঘটনা না থাকলেও এই নির্যাতনের শিকার হয় বৌদ্ধ এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ।

এরপরে হামলা হয় উখিয়াতে। এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত খবরের ভিত্তিতে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের উপরে এই হামলা করে তাদের মুসলিম প্রতিবেশীরাই। এতেও বেশ কয়েকটি প্যাগোডা এবং বসতিতে আগুন জ্বালানো হয়।

এই তিনটি ঘটনাতেই কিছু চমকপ্রদ তথ্য পাওয়া গেছে। স্থানীয় অধিবাসীদের কাছ থেকে জানা যাচ্ছে, ঘটনার সাথে জড়িত ছিলো বিভিন্ন সময়ে এই অঞ্চলগুলোতে স্থান নেয়া রোহিঙ্গারা। শুধু তাই নয়, অনেকেই এই নির্যাতনের ঘটনাটিকে, মায়ানমারে ঘটে যাওয়া সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার প্রতিশোধ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। রামুতে দাঙ্গাকারীদের মাঝে প্রায় হাজারখানেক এর বেশি সংগবদ্ধ রোহিঙ্গার জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে পটিয়াতে যেখানে সনাতন ধর্মালম্বীদের স্থাপনাতেও হামলা হয়েছে তাই এই ঘটনাটি শুধুই মায়ানমারের ঘটনায় বৌদ্ধদের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসা এটা যুক্তিযুক্ত অনুমান নয়।

এই অঞ্চলগুলোতে যা হয়েছে তা সাম্প্রদায়িক নির্যাতন। এই ঘটনায় আক্রান্ত সংখ্যার দিক থেকে দুর্বল সম্প্রদায়্ভুক্তরা এবং ক্ষতিগ্রস্তও এরাই। বিনা উস্কানিতে এই ঘটনা সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায়ের সাম্প্রদায়িক অসহিষ্ণুতা এবং আক্রমনাত্মক আচরণের বহিঃপ্রকাশ।


রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের শরণার্থী হিসেবে সমস্যা :

১৯৭৮ সালে, মায়ানমার সৈন্যবাহিনীর "নাগামিন" অপারেশনের মাধ্যমে নির্যাতিত ও নিহত হওয়ার ভয়ে প্রায় ২,০০,০০০ রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে প্রবেশ করে। "নাগামিন" এর মূল লক্ষ্য ছিলো এথেনিক ক্লিনসিং। তাই সরকার কর্তৃক বিতারিত হয়ে যেসকল রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করে তাদের পক্ষে মায়ানমার আবার ফেরত যাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে। এরপরে ১৯৯১-১৯৯২ সালের সময়, মায়ানমার সরকার কর্তৃক নির্যাতিত হয়ে আবার অসংখ্য রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। পরবর্তিতে জাতিসংঘের সহযোগিতায় এবং বাংলাদেশ-মায়ানমার সরকারের প্রতিনিধিদলের সিদ্ধান্তে কিছু সংখ্যক শরণার্থী মায়ানমার পুনঃপ্রবেশ করলেও অধিকাংশ রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরগুলোতেই থেকে যায়।

এখন বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে প্রায় ৫,০০,০০০ রোহিঙ্গা শরণার্থী অবস্থান করছে। ১৯৯১-৯২ সালে এদেশে আসা শরণার্থীদের অনেকেই দেশে ফেরত গেলেও যারা এখানে থেকে গেছে তাদের মাঝে মাত্র ৩০,০০০ নথিভুক্ত। বাকি প্রায় ২,০০,০০০ নথিভুক্ত নয়। তাই জাতিসংঘের হিসেব অনুযায়ী এই নথিভুক্ত শরণার্থীরাই কক্সবাজারের কুতুপালং এবং নয়াপাড়া এই দুটি শরণার্থী শিবিরে অবস্থান করছে। বাকিদের ব্যাপারে তথ্য অপ্রতুল।

এছাড়াও থাইল্যান্ড-মায়ানমার সীমান্তের থাইল্যান্ড শরণার্থী শিবিরে প্রায় ১,১১,০০০ রোহিঙ্গা শরণার্থী অবস্থান করছে। বিভিন্ন সময়ে আরও কিছু শরণার্থী বিক্ষিপ্ত ভাবে সমুদ্র থেকে থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া এবং আরও কয়েকটি দেশের জাহাজের মাধ্যমে উদ্ধারপ্রাপ্ত হয়। এখানে লক্ষনীয় যে, থাইল্যান্ড এ সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধ ধর্মালম্বী, তাই রোহিঙ্গা মাত্রই বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের প্রতিহিংসার শিকার এই অভিযোগ যারা করে তাদের অভিযোগ ভিত্তিহীন। আরাকানে যে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা তা শুধু বৌদ্ধ রাখাইন আর মুসলমান রোহিংগাদের মাঝেই নয়, আছে অন্যান্য সম্প্রদায়ের মাঝেও। সামরিক সরকারের অন্যায় অবিচারের অধীনে থাকা এই বিভিন্ন সম্প্রদায়গুলো প্রায়ই একে অপরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সংখ্যালঘু হিসেবে শুধু রোহিঙ্গারাই নয় কোকাং, পানথে ইত্যাদি সম্প্রদায়ের লোকজনও সামরিক জান্তার নির্বিচারে নির্যাতনের শিকার। এই পরিস্থিতিকে শুধুমাত্র, মুসলমান-বৌদ্ধ অথবা ধর্মীয় বৈরিতা দিয়ে বিবেচনা করা অযৌক্তিক।

বছরের পর বছর ধরে বিপুলসংখ্য রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। ঘনবসতিপূর্ণ এবং দরিদ্র্য দেশ হিসেবে বাংলাদেশের সরকার নিজেদের জনগোষ্ঠিকেই ন্যায্য সুযোগ-সুবিধা দিতে সক্ষম নয়। তার উপরে অতিরিক্ত জনসংখ্যার চাপ সামলাতে হচ্ছে সবক্ষেত্রে। এরই মাঝে পাঁচ লক্ষেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে দেশে রাখা সরকারের জন্য সকল দিক থেকেই অসুবিধা। তার পরেও নানা সময়ে সরকারের পক্ষ থেকে মায়ানমার সরকারের সাথে আলোচনার মাধ্যমে একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে। কিন্তু রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ব্যাপারে মায়ানমার সরকার সবসময়ই অনমনীয় আচরণ করেছে এবং দেশে ফিরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে কখনোই সম্মত হয়নি। এছাড়াও প্রতিবছর মায়ানমার সরকার ইচ্ছাকৃতভাবেই বাংলাদেশের দুর্গম অঞ্চলগুলো দিয়ে অসংখ্য রোহিঙ্গা পরিবারকে এদেশে পুশ করার চেষ্টা চালিয়েছে এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে সফল হয়েছে। তাই শুধুমাত্র আপদকালীন সময়েই নয়, রোহিঙ্গা শরণার্থী এসেছে সবসময়। রোহিঙ্গা শরণার্থী তাই বাংলাদেশের জন্য একটি লাগাতর সমস্যা। আর এর সমাধানে মায়ানমার সরকার এর কোন সদিচ্ছা নেই। বরং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তারা সামরিক শক্তি দিয়ে সীমান্ত অঞ্চল তটস্থ রেখেছে যাতে কোন রোহিঙ্গা এদেশ থেকে আবার ফেরত যেতে না পারে।


রোহিঙ্গা সম্প্রদায় থেকে উদ্ভূত সমস্যা :

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের স্বাভাবিক জীবনযাপন এর ব্যবস্থা এদেশে অপ্রতুল। যেখানে বাংলাদেশের একটি বৃহৎ জনসংখ্যা বেকার তাই সেক্ষেত্রে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগটিও নগন্য। বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে মানবেতরভাবে তাই জীবন কাটাতে হচ্ছে রোহিঙ্গাদের। তারপরেও প্রতিমাসে অনেক রোহিঙ্গা পরিবার নিয়মিতই অনুপ্রবেশ করছে বাংলাদেশের ভূখন্ডে। কিন্তু এই দুর্দশাই পুরো চিত্র নয়।

রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে প্রবেশের পর থেকেই পার্বত্য অঞ্চলগুলোতে নানা ধরনের অপকর্মের সাথে সরাসরি জড়িত। এই অঞ্চলগুলোর দুর্গম স্থানে শিবির স্থাপন করে অনেক রোহিঙ্গাই সমাজ বিরোধী কার্যকলাপে অংশগ্রহণ করছে। বিভিন্ন সময়ে অপহরণ, হত্যা থেকে শুরু করে অপরাধের নানা শাখায় বিশেষ করে মাদক এবং অস্ত্র চোরাচালানে রোহিঙ্গাদের জড়িত থাকার প্রমান পাওয়া গেছে। এই অঞ্চলের অধিবাসীরা তাই বহুদিন ধরেই রোহিঙ্গাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ। রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলো নানাধরনের অস্ত্রের সহজলভ্য জায়গা। মাদক এবং অস্ত্র/বিস্ফোরক এই দুই ব্যবসায় এসব শিবিরের অনেকেই জড়িত। বেশকিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনায় রোহিঙ্গাদের সম্পৃক্ততার প্রমান প্রায় সময়েই পত্র-পত্রিকায় নজরে এসেছে।

এছাড়াও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাম্প্রতিকতম সময়ের নানা অভিযানে আটককৃত জঙ্গিদের অনেকেই রোহিঙ্গা এবং তারা দেশের ভেতরে নাশকতামূলক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত। এই বিষয়ে নানা তথ্যের ভিত্তিতে প্রমান পাওয়া গেছে, দেশের অভ্যন্তরে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনগুলোর সাহায্যে তারা সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জড়িত। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চল এবং আরাকান নিয়ে তারা স্বতন্ত্র একটি ইসলামিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য সশস্ত্র সংগ্রামের প্রস্তুতিও নিচ্ছে। পাহাড়ের দুর্গম সব জায়গায় ঘাঁটি স্থাপন করে তারা উন্নত অস্ত্র এবং বিস্ফোরকের মাধ্যমে প্রস্তুতিও নিচ্ছে।

এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করে নানা অপকর্ম করিয়েছে কিছু নির্দিষ্ট রাজনৈতিক সংগঠন। তাদের মাধ্যমে ইতিমধ্যে বাংলাদেশের পাসপোর্ট পেয়ে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে অনেক রোহিঙ্গা গেছে। সেখানেও নানা অপরাধ করে তারা ধরা পড়েছে এবং এর প্রতিক্রিয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বাংলাদেশের শ্রমবাজার এবং শ্রমিক রপ্তানি।

বর্তমানের প্রেক্ষাপটে রোহিঙ্গা সম্প্রদায় বাংলাদেশের জন্য হুমকিস্বরূপ। দেশের সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে সক্রিয় এ সম্প্রদায় বিভিন্ন নাশকতামূলক কর্মকান্ডে জড়িত হয়ে এটাই প্রমান করেছে যে, শরণার্থী হিসেবে তাদের স্থান দিয়ে এদেশের মানুষ এবং সরকার ভুল করেছে। তাই এবার পার্বত্য অঞ্চলের স্থানীয় মানুষেরা নিজেরাই ঐক্যবদ্ধভাবে বর্ডার গার্ডস বাংলাদেশের সাথে রাত জেগে পাহাড়া দিয়েছে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীদের রুখতে। রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের সমাজবিরোধী কার্যকলাপ এখন আর স্থানীয় পর্যায়েই সীমাবদ্ধ নয়, বরং তা রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের জন্য একটি মারাত্মক হুমকি। মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিবেচনা করা রোহিঙ্গাদের এদেশে আশ্রয় দেয়া হলেও তারা এর প্রতিদানে শুধু এদেশের সামাজিক ক্ষতি করেই ক্ষান্ত হয়নি, দেশের সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে এরা সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। হয়তো এই গোষ্ঠির সবাই এতে জড়িত নয় কিন্তু তারপরেও সামগ্রিকভাবে বিবেচনায় রোহিঙ্গা সম্প্রদায় এখন বাংলাদেশের জন্য একটি হুমকি।


সাম্প্রদায়িক নির্যাতনের সাথে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের সম্পৃক্ততা :

রামু,পটিয়া এবং উখিয়ায় সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় নির্যাতনের সাথে প্রতক্ষ্যভাবে জড়িত ছিলো রোহিঙ্গারা। তারা লুন্ঠন এবং অগ্নিসংযোগ এসব কিছুর সাথেই জড়িত। শুধু তাই নয়, উস্কানিমূলক সমাবেশের জন্যও এরা দায়ী। এসব অঞ্চলের অধিবাসীরা সরকারের সাথে সহযোগিতা করতে ভয় পাচ্ছেন, কারণ তাদের প্রাণ নাশের হুমকি দিচ্ছে রোহিঙ্গারা। প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা যায়, বাংলাদেশের বিভিন্ন টেলিযোগাযোগ কোম্পানির হাজারখানেকের বেশি সিম সীমান্তের ওপারে রোহিঙ্গাদের কাছে চলমান। আর এসব সংযোগ ব্যবহার করে অনেকদিন ধরেই তারা চোরাচালানের মতো নানাবিধ দুষ্কর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। এবার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপরে সশস্ত্র হামলায় মদদ দিয়ে এইসব সংযোগ থেকেই আবার হুমকি দেয়া হচ্ছে আক্রান্তদের, যাতে তারা কোন তথ্য সরকারী সংস্থাকে না দিতে পারে। এহেন কর্মকান্ড শুধুমাত্র আপত্তিকরই নয়, আতঙ্কের। স্বাধীন দেশের ভূখন্ডের নাগরিকদের একটি ভিন্ন দেশের নাগরিকরা হামলা করছে, নির্যাতন করছে, লুন্ঠন করছে তার উপরে প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করছে, এসকল কর্মকান্ডই বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ।

বাংলাদেশের ভূখন্ডে অবস্থিত সংখ্যালঘু বৌদ্ধ এবং সনাতন কোন ধর্মালম্বীর মানুষই রোহিঙ্গাদের প্রতি কোনধরনের নির্যাতনের জন্য দায়ী নয়। এমনকি সাম্প্রতিক সহিংসতায়ও কোন ধরনের প্রতিরোধ এই সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষগুলো করতে পারেনি। তার পরেও এদেশীয় সাহায্যকারীদের মদদে মায়ানমারের রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের হাজারখানেক সদস্য যখন বাংলাদেশী জনগনকে নির্যাতন করে তখন সেটি আর শুধুমাত্র সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় সীমাবদ্ধ থাকে না। সেটি একটি স্বাধীন দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। এই সাধারণ বিষয়টি এদেশের মানুষকে বুঝতে হবে।

এদেশে চলে আসা রোহিঙ্গাদের অনেকদিন ধরেই একটি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী স্থানীয়ভাবে মদদ দিয়ে যাচ্ছে। এমনকি এদেরকে দেশের নাগরিক হিসেবে নথিভুক্ত করার একটি অপচেষ্টা চলছে অনেক আগে থেকেই। বর্তমানে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির থেকেও এই দাবি উঠেছে যে তাদের বাংলাদেশে বসবাসের অনুমতি দেয়া হোক এবং বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হোক। আর এই ধরনের কর্মকান্ডের পেছনে মদদ রয়েছে চিহ্নিত একটি রাজনৈতিক দলের। তাহলে, ঘটনাচক্রে এই পরিকল্পিত সাম্প্রদায়িক নির্যাতন কি এইসব রোহিঙ্গাদের এই অঞ্চলগুলোতে স্থায়ীভাবে আসন গেড়ে বসার জন্য একটি শো-ডাউন কিনা সেটার আশংকাও উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছেনা।

আজকে যে কারণেই এই সাম্প্রদায়িক নির্যাতন হোক না কেন, সেখানে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের মানুষের অংশগ্রহন দেশের সামাজিক পরিস্থিতির চরম অবনতিকেই নির্দেশ করে।


বাংলাদেশে সংঘটিত সাম্প্রদায়িক নির্যাতন :

স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু বিভিন্ন সম্প্রদায় নানাভাবে সাম্প্রদায়িক নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এই ঘটনাগুলো কোনটাই সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা নয় বরং একপেশে সাম্প্রদায়িক নির্যাতন। আর নির্যাতনের হাত থেকে কেউই মুক্ত নয়। ৯০ এর দশকে সংখ্যালঘু সনাতন ধর্মালম্বীদের প্রতি নির্যাতন, তারপরে ২০০১ সালের পরবর্তী সরকারদলীয় সমর্থিত সাম্প্রদায়িক নির্যাতন এসবই এর প্রমান। শুধু তাই নয়, এই বছরে ফেব্রুয়ারী থেকে শুরু হওয়া বিভিন্ন ঘটনায়, চট্টগ্রাম, সাতক্ষীরা, দিনাজপুর এবং সর্বশেষ রামু, পটিয়া, উখিয়া এদেশে সাম্প্রদায়িক নির্যাতনের জ্বলন্ত উদাহরণ। এই নির্যাতনগুলো একপাক্ষিক এবং এতে আক্রান্ত সম্প্রদায় সংখ্যালঘুরা।

ঘটনা শুধু এতেই সীমাবদ্ধ নয়, আদিবাসী, বাউল, আহমদিয়া ইত্যাদি নানা সম্প্রদায় এদেশে নানাভাবে প্রতিনিয়ত নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। এ ঘটনাগুলো একটি দেশের সামাজিক পরিস্থিতির জন্য হুমকিস্বরূপ। নানা জাতি-বর্ণ-সংস্কৃতির মিশ্র এই সমাজ ব্যবস্থায় কতিপয় ধর্মান্ধ উন্মাদ কর্তৃক এসমস্ত নির্যাতন বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রতির আবহের বিরুদ্ধে একটি প্রশ্নবোধক চিহ্ন এঁকে দিয়েছে।

বিভিন্ন সময় এসমস্ত নির্যাতনের প্রতিবাদকারীদের প্রায়শই কিছু যুক্তির মুখোমুখি হতে হয়। আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের প্রতি নির্যাতনের সাথে এদেশের নির্যাতনকে এক করে অনেক সময়ই জল ঘোলা করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু সাধারণ মানুষদের এটা ভুলে গেলে চলবেনা, একটি দেশের অভ্যন্তরে সংঘটিত সাম্প্রদায়িক নির্যাতনের ঘটনার দায় সমানভাবে সকল নাগরিক এর উপরেই বর্তায়। শুধু তাই নয়, এটি সমাজের অস্থিতিশীল একটি অবস্থাকে উন্মোচন করে এবং সম্প্রীতির সমাজকে সহিংসতার দিকে ধাবিত করে। আর এই সহিংসতার কবল থেকে আপাতদৃষ্টিতে কেউ কেউ নিরাপদ হলেও অদূর ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করলে আসলে কেউই নিরাপদ নয়। যখন একটি মৌলবাদী সমাজের উত্থান হয় তার রেশ শুধু সংখ্যালঘুদের উপরেই সীমাবদ্ধ থাকে না, এর রেশ পড়ে সামগ্রিক সমাজব্যবস্থার উপরে।

তাই সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়টিকে কোন যুক্তিতেই হালকা ভাবে দেখার অবকাশ নেই। এদেশের সংখ্যালঘুদের উপাসনাস্থলের ক্ষতিসাধন, তাদের মানসিক নির্যাতন ইত্যাদি ঘটনা নিত্য নৈমিত্তিক ঘটছে। কিন্তু এর ব্যাপ্তি ভবিষ্যতে শুধু এতেই আবদ্ধ থাকবেনা, আস্তে আস্তে আক্রান্ত হবে অন্যান্যরাও। মৌলবাদী ধর্মান্ধ একটি গোষ্ঠির উত্থান কখনোই কারো জন্য সুফল বয়ে আনেনা, আনতে পারেনা। তাই এই ঘটনাগুলোকে ভাবার সময় এখনই।

----------------------------------------



সাম্প্রতিক সময়ে ঘনঘন ঘটে চলা সাম্প্রদায়িক নির্যাতন, দেশে মৌলবাদী এবং উন্মাদ একটি মানসিকতার উত্থান নির্দেশ করে। অশিক্ষিত, স্বল্পশিক্ষিত কিংবা শিক্ষিত জনগোষ্ঠীকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে ধীরে ধীরে সাম্প্রদায়িকতার এই শেকড় ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে সমাজের সকল স্তরেই, পরিকল্পিতভাবে। প্রায়শই সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্পে বুঁদ হয়ে উন্মত্ততায় মেতে উঠা একটি জনগোষ্ঠির আচরণ যখন স্বাভাবিক হয়ে উঠে তখন বোঝা উচিত সমাজের ভারসাম্য হুমকির মুখে। সম্প্রীতির সংস্কৃতিকে পাশ কাটিয়ে যখন ধর্মান্ধতাই মূল হয়ে উঠে তখন সমাজব্যবস্থার প্রতি নাগরিকদের গভীর মনোযোগ দেয়া প্রয়োজন বৈকি। এই অস্থিতিশীল সময়ে যেকোন ধরনের সাম্প্রদায়িকতা রুখে দাঁড়ানোর জন্য সাধারণ নাগরিকদেরই প্রস্তুত থাকতে হবে। মনে রাখা উচিত, মৌলবাদী মনোভাব কোনভাবেই মঙ্গলজনক নয়।


তথ্য কৃতজ্ঞতা-

দৈনিক জনকন্ঠ
দৈনিক প্রথম আলো
বিডিনিউজ ২৪
বাংলানিউজ ২৪
উইকিপিডিয়া

তিনটি প্রাসঙ্গিক লেখা-

রোহিঙ্গা শরণার্থী প্রসঙ্গে বাংলাদেশের অবস্থান
রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ, জঙ্গি তৎপরতা এবং বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগজনক একটি পরিস্থিতি
আমাদের দেশটা স্বপ্নপুরী





















No comments:

Post a Comment